আসাদুল্লাহ (পাবনা) : পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষি বিপ্লব ঘটেছে। এ সকল বিলে নিচু জমিগুলো আমন মৌসুমে ধানের আবাদ শেষে প্রায় দুই মাস পতিত পরে থাকতো। বর্তমানে অধিকাংশ কৃষক জমি পতিত না রেখে বাড়তি ফসল হিসেবে উচ্চ ফলনশীল সরিষার চাষ করছেন। আবাদও ভালো হচ্ছে । ফলে সরিষা চাষ করে উদ্বৃত্ত অর্থ উপার্জন করায় বোরো চাষের খরচ উঠেও উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে কৃষকদের। বিলের বিপুল পরিমান জমিতে সরিষার ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এলাকায় ভজ্যে তেলের আমদানী নির্ভরতাও কমেছে। চলতি মৌসুমে সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে এলাকা একাকার হয়ে গেছে।
সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে দেবোত্তর, একদন্ত, লক্ষীপুর, চাঁদভা, মাজপাড়া ও আটঘরিয়া পৌর এলাকায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৫শ ৬০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশিল সরিষা চাষ হচ্ছে। গত বছর সরিষা আবাদ হয়ে ছিলো ২ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর জমিতে। তবে এ মৌসুমে ৪০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা আবাদ করছেন কৃষকেরা। সরিষার জমিতে হলুদ ফুলে ফুলে একাকার হয়ে গেছে। বিল এলাকার কৃষকদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বিনা মূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করেছে সরকার। কৃষকরা আশা করছেন, এবার বাম্পার ফলন হবে।
আটঘরিয়া উপজেলার হিদাসকোল গ্রামের কৃষক মো. ফরিদ হোসেন জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৩ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। বিঘাপ্রতি প্রায় ৭ মণ হারে ফলন পাওয়া যেতে পারে। এবার মৌসুমের শুরতেই সরিষার জমিতে পোকার আক্রমন হয়েছিলো। পোকা মাকড়ের আক্রমন অতি দ্রুততা রোধ করা সম্ভব হয়েছে কৃষকদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের সজাগ থাকায় । তিনি আরো জানান, এ এলাকার কেউ জমি চাষ করে সরিষা বপন করেন আবার কেউ কেউ বিনা চাষে পতিত জমিতে বীজ ছিটিয়ে সরিষা আবাদ করেন।
একই এলাকার কৃষক মুকুল হোসেন ও আরিফুজ্জামান জানান, বিল থেকে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকেরা সে জমিতে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বিঘাপ্রতি প্রায় ৭ মণ হারে ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কৃষক আরিফ জানান, দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষে ৫-৬ হাজার টাকা খরচ হয় এবং প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ থাকে। আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ জানান, এই উপজেলার একটি পৌরসভার ও পাঁচটি ইউনিয়নে ২ হাজার ৫শ ৬০ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা চাষ হচ্ছে। কৃষকেরা বারী-১৪, ১৭, বিনা-১০, টরি-৭ জাতের সরিষা আবাদ করছেন। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ১.২ টন পাওয়া যায় । এখন পর্যন্ত এখানের আবহাওয়া সরিষা চাষের অনুকূলে আছে। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।