বুধবার , ডিসেম্বর ১৮ ২০২৪

ঢাকায় এফএওর আঞ্চলিক সম্মেলন সমাপ্তি

চূড়ান্ত রিপোর্টে ডিজিটাল হাব স্থাপন, গবেষণার বিশেষ ফান্ড গঠন,সবুজায়ন, জলবায়ুসহনশীল  কৃষি, ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ গৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) চার দিনব্যাপী৩৬ তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন (এপিআরসি) আজ শেষ হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সম্মেলনে ডিজিটাল হাব স্থাপন, গবেষণার জন্য বিশেষ ফান্ড গঠন, সবুজায়ন বৃদ্ধি, জলবায়ুসহনশীল  কৃষি, টেকসই কৃষিখাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং মানুষ, প্রাণি ও পরিবেশের স্বাস্থ্যকে সমান গুরুত্ব ও আন্তনির্ভরশীল হিসেবে বিবেচনা করে ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচকে অগ্রাধিকার দিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট গ্রহণ করেছে এপিআরসির সদস্য ৪৬টি দেশ।

শুক্রবার (১১ মার্চ) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি এসব কথা বলেন। এসময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম ও খাদ্যসচিব নাজমানারা খানুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে বাংলাদেশ পরবর্তী দুই বছরের জন্য এপিআরসির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। পরবর্তী ৩৭তম এপিআরসি  সম্মেলন শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আমরা যেরকমটা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে। মানবজীবনের সবকিছুকেই এটি প্রভাবিত করবে, তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি। আর কোভিডের প্রভাবে এ অঞ্চলের কৃষি, খাদ্য ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। সারের উৎপাদন কমে গেছে। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী  দেশগুলো  এ ব্যাপারে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মালদ্বীপ তাদের অস্থিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

মন্ত্রী জানান, এ অবস্থায়, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ও কোভিড মোকাবেলা করে  টেকসই  কৃষিখাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গবেষণার মাধ্যমে  ফসলের নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তা সম্প্রসারণে একসাথে কাজ করার কথা রিপোর্টে বলা হয়েছে। এখানে এফএও বিরাট ভূমিকা রয়েছে।

কৃষিতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য একটি ‘ বিশেষ ফান্ড’ গঠনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে এটিকে চূড়ান্ত রিপোর্টের মধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলে কৃষিমন্ত্রী জানান।

কৃষিমন্ত্রী বলেন,  এ সম্মেলনে ডিজিটালাইজড কৃষি গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশ এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য এফএওকে একটি ‘ডিজিটাল হাব’ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল, সকল দেশ এটি গ্রহণ করেছে। ডিজিটাল হাবে ৪৬টি দেশের কৃষিপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী তথ্যসমৃদ্ধ  থাকবে, যাতে সকলদেশ উপকৃত হতে পারে। জাপানের উদাহরণ তুলে মন্ত্রী বলেন, জাপান কৃষিতে ড্রোন, রোবট ব্যবহার বা প্রিসিশন কৃষি করছে।

কৃষিমন্ত্রী জানান, মানুষ, প্রাণি  ও পরিবেশের স্বাস্থ্য রক্ষায় ‘ ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ’ গ্রহণ করা হয়েছে। ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচে গড়ে তুলতে অগ্রাধিকার চিহ্নিতকরে রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়।  জুনোটিক বা প্রাণি থেকে মানুষে সংক্রমিত রোগের প্রকোপ দিনদিন বেড়ে চলেছে। চলমান কোভিড এর অন্যতম উদাহরণ। এ অবস্থায় এ অঞ্চলে ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে দেশগুলো।

ভালো পরিবেশেই শুধু ভালো জীবনযাপন করা সম্ভব উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, এশিয়া প্যাসিফিকে যে খাদ্য যতটা পাওয়া যাচ্ছে সেটা যেন নিরাপদ এবং পুষ্টিকর হয়-সেটা নিশ্চিত করতে সকল দেশ একমত রয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্মেলন আয়োজনের জন্য সদস্যদেশসমূহ বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। তারা বাংলাদেশের সক্ষমতা দেখে আশ্চর্যান্বিত হয়েছে।

This post has already been read 3768 times!

Check Also

ফসলের উৎপাদন বাড়তে বেশি করে গবেষণার নির্দেশ দিয়ে কৃষিমন্ত্রীর

গাজীপুর সংবাদদাতা: ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বেশি করে গবেষণা করতে কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের নির্দেশ …