জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ পালন করেছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)।
দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিএলআরআই এর পক্ষ থেকে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সকাল ৬ টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরো ছিলেন উপস্থিত বিভাগীয় প্রধানগণ, প্রকল্প পরিচালকগণসহ ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন স্তরের বিজ্ঞানী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর সকাল সাড়ে ৯টায় মহাপরিচালক ও অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ বিএলআরআই এর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অস্থায়ী বেদিতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল ১০ টায় ইনস্টিটিউটের চতুর্থ তলার সম্মেলন কক্ষে শুরু হয় বাচ্চাদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় মোট দুইটি গ্রপে শূন্য থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিশুরা অংশগ্রহণ করে।
বেলা ১১.০০ ঘটিকায় চতুর্থ তলার সম্মেলন কক্ষে শুরু হয় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ফার্মিং সিস্টেম রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রদান ড. রেজিয়া খাতুন। আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও জাতীয় শিশু দিবসের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. সাজেদুল করিম সরকার এবং শিশুর স্বাস্থ্য সচেতনতা, পুষ্টি ও খাদ্য সম্পর্কে আলোচনা করেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (রু: দা:) ও প্রাণী উৎপাদন গবেষণা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. বিপ্লব কুমার রায়। এছাড়াও আলোচনা বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরিচালক (গবেষণা) ড. নাসরিন সুলতানা।
প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের সম্মানিত মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। জাতির পিতার শৈশব ও জীবনের নানা ইতিহাস তুলে ধরার পশাপাশি প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন স্বভাবজাত নেতা, নেতৃত্বের গুণ তাঁর মধ্যে বিকশিত হয়েছিল খুব ছোট থেকেই। একই সাথে অধিকার আদায়েও তিনি ছিলেন সবার আগে। বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে শিশুদের প্রতি ছিলো অপরিসীম প্রেম। শিশুদের কল্যাণেও তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। আর তাই তো তাঁর জন্মদিনেই পালন করা হয়ে থাকে জাতীয় শিশু দিবস, যাতে করে এদেশের সকল শিশু তাঁর আদর্শ ধারণ করে বড় হয়ে উঠতে পারে। একই সাথে তিনি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠার গুরুত্ব ও পুষ্টি চাহিদা পূরণের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তাই তিনি কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে সব সময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।
এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানের পূর্বে মহাপরিচালক মহোদয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে আয়োজন করা হয় দোয়া মাহফিল। মাহফিলে বাংলাদেশের সর্বাঙ্গীন উন্নতি কামনার পাশাপাশি দেশের সকল শিশুর উজ্জ্বল, নিরাপদ ও সুখী-সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ কামনা করা হয়।
দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিলো বিএলআরআই এর প্রধান ও আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে আলোকসজ্জাকরণ এবং বিএলআরআই এর প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। উল্লেখ্য দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমিত পরিসরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিএলআরআই জাতির পিতার জন্মদিন ও শিশু দিবসের কর্মসূচি পালন করে।