চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর প্রতিশ্রুতি মেনে কয়লাখাতে বিনিয়োগ বন্ধ করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীগণ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে চীনের প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি পূরণের এক বছর পূর্তিতে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও এলাকায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা এ দাবি তোলেন। বেসরকারি সমাজ উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান আইএসডিই-বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি)-এর যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি আয়োজিত হয়।
মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, চীন শুধু বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্রই নয়, বরং বাংলাদেশের উন্নয়নে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়া চীন পৃথিবীর সবথেকে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাতা দেশও বটে। গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে চীনা কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে জানায় যে, বাংলাদেশে কয়লাবিদ্যুতের মতো বায়ুদূষণকারী খাতে আর কোনো বিনিয়োগ করবে না। এছাড়া গত বছর (২০২১) সেপ্টেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে বহির্বিশ্বে নতুন কোনো কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি না করার ঘোষণা দেন। কিন্তু চীনা ব্যাংক ও কোম্পানিগুলো এখনও পটুয়াখালীর পায়রায় আরো একটি কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য অর্থায়ন করবে বলে জানা গেছে।
কর্মসূচিতে বিডাব্লিউজিইডি’র সদস্য সচিব হাসান মেহেদী বলেন, বাংলাদেশে সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে যা দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাই চীনের উচিৎ উন্নত মানের প্রযুক্তি ও অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্জনের পথে সাহায্য করা। ইতোমধ্যে ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ সরকার মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। চীনের সহায়তা পেলে সরকার খুব দ্রুত এ পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে।
আইএসডিই-বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, কয়লাবিদ্যুতের ফলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যহানি ও পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এছাড়া আমদানিকৃত কয়লা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। তাই এ খাতে চীনের বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই, চীনের উচিৎ প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি অমান্য করে কয়লা খাত থেকে সব ধরনের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা।
কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, বিশিষ্ঠ কলামিস্ট মুসা খান, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মুহাম্মদ জানে আলম, বাংলাদেশ ভেজিটেবল এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য সেলিম জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ কিন্ডার গার্ডেন ঐক্য পরিষেদের বিভাগীয় সহ-সভাপতি আবু ইউনচ, চান্দগাঁও ল্যাবরেটরী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইসমাইল ফারুকী, বাংলাদেশ কিন্ডার গার্ডেন ঐক্য পরিষেদের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ক্যাব জামালখানের সভাপতি সালাহ উ্দ্দীন আহমদ, ক্যাব পাঁচলাইশের সহ-সভাপতি নারী নেত্রী সায়মা হক, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি চট্টগ্রামের নেতা সচিত্রা গুহ টুম্পা, ক্যাব পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভুইয়া, মানবাধিকার সংগঠক ওসমান জাহাঙ্গীর, সিএসডিএফ’র শম্পা কে নাহার, আইএসডিই’র মোঃ জাহঙ্গীর আলম, আরিফুল ইসলাম ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, ক্যাব যুব গ্রæপের যুগ্ন সম্পাদক আমজাদুল হক আয়েজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আবরার সুজন আয়ান, প্রচার সম্পাদক ইমদাদুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক রাসেল উদ্দীন, দপ্তর সম্পাদক আবুল কালাম, সদস্য নাঈম মুহাম্মদ নিশা, সালমান রশিদ অভি প্রমুখ।