ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। উপকূলীয় অঞ্চলে বিগত কয়েক বছর ধরে চিংড়ি উৎপাদন কমলে মৎস্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় ডুমুরিয়ায় ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চাষ করে চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মৎস্য উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার শোভনার বারুইকাটি বাগদা চিংড়ি চাষি ক্লাস্টার। বারুইকাটি ক্লাস্টারের পাশাপাশী দক্ষিণ উপকুলীয় অঞ্চলে শিক্ষিত বেকারদের মাঝে নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে সম্ভাবনাময় ক্লাস্টার পদ্ধতির চিংড়ি চাষ। ফলে ক্লাস্টার পদ্ধতির এ চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মৎস চাষে উন্মোচিত হচ্ছে ব্যাপক কর্মসংস্থানের দ্বার।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার শোভনায় বারুইকাটি বাগদা চিংড়ি চাষি ক্লাস্টারের চাষিদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন। মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক।
এ সময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তর খুলনা বিভাগেরর উপ-পরিচালক মোঃ তোফাজ উদ্দীন আহমেদ, খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল, বাগেরহাট জেলা মৎস্য অফিসার এ এস এম রাসেল, সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের উপ- প্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রী, মোঃ মইনউদ্দিন আহমেদ, এসএলএ,সলিড্যারিড্যাড,ঢাকা, খুলনা জেলা সমন্বয়কারী মোঃ মশিউর রহমান, ডুমুরিয়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবুবকর সিদ্দিকসহ মৎস্য দপ্তরের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারগণ,ক্লাস্টার চাষি,সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডুমুরিয়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে। একই জমিতে গলদা, বাগদা, রুই, কাতলা, পাশে, তেলাপিয়া ইত্যাদি মাছের চাষ এবং ঘেড়ের পাড়ে প্রচুর পরিমাণে সবজি চাষ করা হচ্ছে। ক্লাস্টার পদ্ধতিতে নিষিদ্ধ কোন ঔষধ বা কীটনাশক ব্যবহার না করায় উৎপাদিত পণ্যের নিরাপদ তা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। যার কারনে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে ঘেরের পণ্যের চাহিদা ও মূল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে ক্লাস্টারের মৎস্য চাষিরা লাভবান হচ্ছেন ।
উল্লেখ,২০২০ সালের অক্টোবরে তৎকালীন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান ( খসরু ) এমপি, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মন্ডল, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ সহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তা গণ বড়ডাঙ্গা চিংড়ি চাষী (সিআইজি) সমবায় সমিতির মডেল সরেজমিনে পরিদর্শন করেন । পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী সিআইজি প্রকল্পের প্রসংশা করেন এবং দেশে চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ক্লাস্টার পদ্ধতির চিংড়ি চাষের এই মডেল সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। ক্লাস্টার পদ্ধতির এ মডেলের উদ্ভাবক সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের উপ- প্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রী বলেন, ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ পদ্ধতিটি নিরাপদ চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধি, উপকূলীয় কৃষি ভিক্তিক অর্থনীতির উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করা। দেশের প্রতিটি ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ সম্ভব হলে চিংড়ি সেক্টরে ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশী দেশের দক্ষিন উপকুলীয় অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের দ্বার উন্মোচন হবে । পুনরায় অর্জিত হবে সাদা সোঁনার বৈদেশিক মুদ্রা ।