নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রায় ৪ বিলিয়ন মানুষের বাস। এশিয়ান ট্রেড প্রোমশন ফোরাম (এটিপিএফ) এর মাধ্যমে পারস্পরিক তথ্য বিনিময়, যৌথভাবে প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা হলে সকলেই উপকৃত হবে। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়েং যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। এখানে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ প্রায় সতের কোটি মানুষের একটি বড় বাজার, পাশাপাশি ভারত ও চীন বিশাল বাজার। কম খরচে বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই আকর্ষনীয়। বাংলাদেশ সকল বিনিয়োগের নিরাপত্তা দিচ্ছে। যে কোন দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (১৯ অক্টোবর) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এ এশিয়ান ট্রেড প্রোমশন ফোরাম (এটিপিএফ) এর দু’দিনব্যাপী ৩৫তম সিইও সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত প্রায় আড়াই বছর কোভিড-১৯ এর কারনে বিশ^মন্দা অর্থনীতির মাঝেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল ছিল। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জ¦ালানী ও গ্যাস সংকটের কারনে বিশ^ব্যাপী বিরুপ প্রভাব পরেছে, বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। তারপরও বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে। দেশের জিডিপি গ্রোথ ছয় পার্সেন্টের উপরে, মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ছে, সকল অর্থনীতির সূচক পজেটিভ ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের বর্তমান ব্যবসা বান্ধব সরকার বাণিজ্য, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এশিয়ান ট্রেড প্রোমশন ফোরাম (এটিপিএফ) এর মোট সদস্য ২৩ টি দেশ। ফোরামের সদস্য দেশগুলো হলো- অষ্ট্রেলিয়া, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওপিডিআর, সিঙ্গাপুর নেপাল, কম্বোডিয়া, হংকং, ম্যাকাউ চায়না, ভারত, জাপান, রিপাবলিক অব কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, ব্রুনাই দারুসসালাম, মায়ানমার, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, চাইনিস তাইপে ও ভিয়েতনাম। ফোরামের সচিবালয়ের দায়িত্ব পালন করছে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন(জেটরো)। এ ফোরামের ৩৪তম সভা জুম প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালের ২৬-২৭ অক্টোবর। এ বছর তিনদিনব্যাপী (১৮-২০ অক্টোবর ) ৩৫তম সিইও সভা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সভায় বিষয়ভিত্তিক আলোচনার পাশাপাশি যৌথ প্রকল্প ও বাস্তবায়ন, নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করণের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, আঞ্চলিক বাণিজ্যে সমস্যা চিহ্যিত করে সরাসরি যোগাযোগ করে তা সমাধান করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ ফোরামের কো-চেয়ারম্যান এবং জেটরো’র চেয়ারম্যান নবুহিকো সাসাকি এর সাথে একান্ত বৈঠক করেন। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির আহবান জানান এবং টেকনোলজি ক্ষেত্রে সহযোগিতা চান।
রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসানের সভাপতিত্বে সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, জেটরো’র চেয়ারম্যান নবুহিকো সাসাকি(ঘড়নঁযরশড় ঝধংধশর ) এবং এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন।