নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের একমাত্র অ্যাকুয়াকালচার গবেষণা ও উদ্ভাবন স্টার্ট আপ হিসেবে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ)- ২০২৩ এর সেরা স্টার্টআপ পুরস্কার অর্জন করেছে “ম্যাভেরিক ইনোভেশন“। উপকূলীয় গ্রামীণ কৃষকদের জন্য গলদা চিংড়ির উন্নত নার্সারি পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি এ পুরস্কার অর্জন করে। সেরা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ম্যাভেরিক ইনোভেশন পেয়েছে ১০ লাখ টাকা।
শনিবার (১৭ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিগ ২০২৩ এর গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে উক্ত সম্মাননা ক্রেস্টসহ পুরস্কার গ্রহণ করেন “ম্যাভেরিক ইনোভেশন“ এর প্রতিষ্ঠাতা কবির চৌধুরী।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ।
এ সম্পর্কে এক প্রতিক্রিয়ায় ম্যাভেরিক ইনোভেশন এর প্রতিষ্ঠাতা কবির চৌধরী বলেন, এ অর্জন কেবল আমার একার নয়, এ অর্জন পুরো “ম্যাভেরিক ইনোভেশন“ টীমের। এ অর্জন আমাদেরকে যেমন আনন্দিত করেছে ঠিক তেমনি দেশের প্রতি দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশের মৎস্য সেক্টরে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে আমরা এখন দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী।
“এক ঝাঁক স্বপ্নময়ী, ভবিষ্যতের বিশ্বজয়ী তরুনের সান্নিধ্যে ক’দিন কাটিয়ে মনে হলো, ২০৪১ হয়তো ‘৩১ এই চলে আসবে। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য, দেশের মানুষের শুধু পুষ্টি চাহিদা পূরণ-ই নয়, খাদ্যপণ্য আমদানি কমিয়ে মূল্যবান বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন ও সংরক্ষণ। উৎপাদন ও সরবরাহের জায়গাগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে চাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি -যোগ করেন মি. চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র অ্যাকুয়াকালচার গবেষণা ও উদ্ভাবন স্টার্ট আপ হিসেবে “ম্যাভেরিক ইনোভেশন” দল ১ম ৫১ জনের মধ্যে থাকতে পেরে গর্বিত। আমাদের “রাস” নির্ভর শূন্য বর্জ্য প্রকল্প একটি অনন্য প্রকল্প হিসেবে যেমন সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে, তেমনি অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের সাথে মিলে ভবিষ্যতের বড় কিছু সম্ভাবনার সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে।
এ সময় তিনি Bangabandhu Innovation Grant (BIG), IDEA এবং ICT পরিবারকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ)- ২০২৩ এ অংশগ্রহণের উদ্যোগ নেয়ার জন্য ম্যাভেরিক ইনোভেশন এর ড. ফররুক রুমিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ডেয়ার টু স্ট্যান্ড বিগ- স্লোগানটি নিয়ে আয়োজিত বিগ-২০২৩ এর সারা দেশে ক্যাম্পেইন শেষে প্রাথমিক পর্যায়ে ছয় হাজার ৮৪৬টি স্টার্টআপ ও উদ্ভাবক এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করে। এদের মধ্যে বাঁছাই করে মোট ৫০টি প্রতিষ্ঠানকে সেরা এবং ২টি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় সেরাদের সেরা পুরস্কার।
তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের অনুপ্রাণিত করতে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) অধীনে ‘উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (আইডিয়া)’ তৃতীয় বারের মতো আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ)। এ আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য হলো তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করে দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা।
বিগ-২০২৩ এ প্রাথমিকভাবে ছয়টি স্ক্রিনিং টিম গঠন করে নিবন্ধিত স্টার্টআপদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ২২৪টি স্টার্টআপকে অনলাইন পিচিং রাউন্ডের জন্য নির্বাচন করা হয়। অবশেষে পাঁচটি প্যানেলে অনলাইন পিচিং রাউন্ড শেষে মোট ১০৩টি স্টার্টআপ যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে অনুষ্ঠিত বিগের তিন দিনব্যাপী বুটক্যাম্পে গত ৯ থেকে ১১ জুন অংশ নেয়। পরে পাঁচটি প্যানেলের জাজিং রাউন্ড শেষে পাওয়া যায় ৫২টি সেরা স্টার্টআপ।