মোছা. সুমনা আক্তারী (রাজশাহী): গত শনিবার (১৯শে আগস্ট) নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে নটাবাড়িয়ায় আউশ মৌসুমে সমলয় পদ্ধতিতে ব্রি ধান৯৮ চাষাবাদে উদ্ভুদ্ধকরণে ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
আউশ মৌসুমে সমলয় পদ্ধতিতে ব্রি ধান৯৮ চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণে ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর
বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ ও নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ এবং নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা।
বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শারমিন সুলতানা এবং জেনারেল ম্যানাজার নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ -২ এর মো. মোমীনুল ইসলাম ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী অঞ্চলের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পিএসও কৃষিবিদ ডঃ মো. ফজলুল ইসলাম
ধান কর্তন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমাদের দেশের চলমান খাদ্য নিরাপত্তায় আউশের ভুমিকা ব্যাপক। আউশ ধান আবাদে বৃদ্ধি পেলে বোরো ধান চাষের উপর চাপ কমবে। এছাড়া এই ধান আবাদে পানির পরিমান কম লাগে।
তিনি আরো বলেন ব্রি ধান৯৮ আউশ ধানের বাম্পার ফলন, বছরে চার ফসলের সম্ভাবনায় খাদ্য নিরাপত্তায় বিরাট ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে আউশ উৎপাদন কোন বিকল্প নেই যেহেতু দিন দিন কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, বিপরীতে জনসংখ্যা বাড়ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান ঠিক রাখতে হলে একই জমি থেকে বছরে বার বার ফসল ফলাতে হবে, বেশি করে ফসল ফলাতে হবে। সাধারণত ১৪০-১৬০ দিনের মধ্যে ধান হয়, সেই ধান যদি ৯০-১০০ দিনের মধ্যে হয়, তাহলে সেটি বিরাট সম্ভাবনাময়। ব্রি ধান৯৮ আউশ ধান এই সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে, এজাতটি ৯০-১০০ দিনে হচ্ছে; ফলনও বিঘাতে ২৫-৩০ মণ। এ জাতটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তায় বিরাট ভূমিকা রাখবে।
উন্নত জাতের অভাব এবং খরা, বন্যা ও অতিবৃষ্টির ঝুঁকির কারণে দেশে এখন আউশ ধান অনেক কমে গেছে। বেড়েছে বোরো ও আমনের চাষ। তবে আশার কথা আমাদের বিজ্ঞানীরা স্বল্পজীবনকালীন উন্নত জাতের আউশ ধান উদ্ভাবন করেছেন। ব্রি ধান৯৮ মাঠে খুবই সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। এ জাতটি মাঠ পর্যায়ে জনপ্রিয় করতে পারলে দেশে আউশ আবার বড় ফসলে পরিণত হবে। এই ধরনের আবাদ করে একই জমিতে বছরে ৪টি ফসল ঘরে তোলার পরিকল্পনা করবেন কৃষকরা। তারা জানান, ব্রি ধান৯৮ জাতের এই আউশ ধানটি ২০ দিনের চারাসহ মোট ৯৮-১০০ দিনের মধ্যে কর্তন করেছেন।
ধান কর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতি তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন, শস্য কর্তনের মাধ্যমে ফসলের ফলন সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। তাই আউশ ধান কর্তনের মাধ্যমে ধান চাষের ভুলক্রটি সংশোধন করে নেয়া সম্ভব হয়। তিনি আরো বলেন উপজেলায় এ বছর আউশ ধান যে পরিমান আবাদ করা সম্ভব হয়েছে তা যদি রোগবালাই বা কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হয় তাহলে আউশ ধানের ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব হবে।
উক্ত শস্য কর্তন ও কৃষক সমাবেশে আউশ ব্রি ধান৯৮ অনুষ্ঠানে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এলাকার প্রায় ৪০০ জন আদর্শ কৃষক উপস্থিত ছিলেন।