নিজস্ব প্রতিবেদক: সকলের আন্তরিকতা, সমন্বিত প্রচেষ্টা ও টিমওয়ার্কের ফলে ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য কোম্পানি হিসেবে তার অগ্রযাত্রাকে ধরে রেখেছে। অনেক প্রতিকূলতা ছিল, অনেক প্রতিকূলতা হয়তো আছে; আমরা এগুলোকে মোকাবেলা করেই চলেছি। তবে এই প্রতিকূলতা থেকে আমরা শিক্ষণীয় একটি জিনিস আমরা পেয়েছি এবং সেটি হলো প্রতিকূলতাকে কীভাবে জয় করা যায়। ভবিষ্যতেও হয়তো এমন সংকট ও প্রতিকূলতা অনেক আসবে। তাই, আমাদেরকে সকলকেই হাতে হাত মিলিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করতে হবে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) মৎস্য সেক্টরের স্বনামধন্য কোম্পানি ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড -এর ‘১৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২৩’ এ এসব কথা বলেন ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড -এর চেয়ারম্যান খোন্দকার ফরহাদ হোসেন।
সকাল ৯টায় ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড -এর মো. জিয়াউর রহমান (এক্সিকিউটিভ, টিএস) ও একেএম অমিত হাসান (সিনিওর মার্কেটিং অফিসার) কর্তৃক পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত এবং তরুন কুমার দাস (সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার, গ্রোটেক এনিমেল হেলথ) কর্তৃক পবিত্র গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। রাজধানীর উত্তরাস্থ জমজম কনভেনশন সেন্টারে ক্লাবে সাধারণ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বার্ষিক টার্গেট ঘোষণা করেন ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউল করিম ভূঁইয়া । আমরা যে যে কাজটিই করি সেটি যদি হৃদয় দিয়ে করার চেষ্টা করি, তাহলে সাফল্য আসবেই ইনশাল্লাহ। পবিত্র কুরআনের এক আয়াতের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ কখনোই কারো সামর্থ্যের বাইরে কাউকে কিছু চাপিয়ে দেন না।
“আরেকটি বিষয়, আমরা যখন যে, যে অবস্থা্তেই থাকি, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। যে যত শুকরিয়া আদায় করবেন, সে তত ভালো থাকবে। সাফল্যের প্রথম শর্তই হচ্ছে শুকরিয়ি এবং দ্বিতীয় শর্ত সবর করা। আমাদের মনোছবি হতে হবে পরিচ্ছন্ন ও বড়। আমরা আমাদের পথচলায় বিষয়গুলো মেনে চলবো।” -যোগ করেন আতাউল করিম ভূঁইয়া ।
অনুষ্ঠানে দিক নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড -এর পরিচালক মোহাম্মদ তারেক সরকার। তিনি বলেন, একই কাজ সবাই করে কিন্তু সবাই সফল হতে পারে না। কারণ, কাজ একই হলেও যারা সফল হয়, তারা একই কাজ ভিন্নভাবে করে। যারা একই কাজ ভিন্নভাবে করতে পারে তারাই কিন্তু সফল হয়। ভিন্নভাবে কাজ করাটাই ক্রিয়েটিভিটি (সৃজনশীলতা)। ইনশাল্লাহ, আমাদের ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে সবাই এগিয়ে যাবো।
তারেক সরকার বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে যারা পুরস্কার পেয়েছে, কেবল তারাই যে সফল তা নয়, বরং এখানকার সবাই সফল। কারণ, আগামীতে হয়তো আপনিই পাবেন সেই পুরস্কার। আর সফলতার সাথে নৈতিকতা ধরে রাখতে হবে। আমরা কখনোই যেন নৈতিক অবস্থান থেকে সরে না যাই। কারণ, সফলতার সাথে নৈতিকতার একটি নিবিঢ় সম্পর্ক আছে। এ সময় তিনি কোম্পানির গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ (R&D) সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত দিক নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড -এর জেনারেল ম্যানেজার রাফিউল হাসান চৌধুরী কোম্পানির বিগত ২০২৩ সনের বার্ষিক প্রতিবেদন ও আগামী দিনের সেলস পলিসি উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত বিপণন কর্মকর্তাদের বিপণন বিষয়ে উৎসাহের মাধ্যমে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। এছাড়াও তিনি গত বছরের কর্মকর্তারা কে কোন কর্মকান্ডে জড়িত এবং তাদের সাফল্য উপস্থাপন করে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহিত করেন।
অনুষ্ঠানে গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উপর প্রতিবেদন তুলে ধরেন ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড-এর গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সোহেল মিয়া এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. আরিফুল ইসলাম। এ সময় তাঁরা দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষকৃত মাছের পুকুরের ডেমো ফলাফল প্রদর্শন করেন। সেখানে তারা বিভিন্ন গবেষণাধর্মী সাফল্য ও করণীয় উল্লেখ করেন। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিক্রয় প্রতিনিধিদের সাথে গ্রুপ ডিসকাশন করেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভায় ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড এর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের স্ব স্ব অবস্থানে বিশেষ অবদানের জন্য ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে বিশেষভাবে পুরষ্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে নতুন বছরের ইনক্রিমেন্ট, প্রমোশন, ইনসেনটিভ ছাড়াও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী রাখা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের মাঝে বার্ষিক নগদ প্রণোদনা ও শীতের প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদান করা হয় আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভায়। এ পর্বটি পরিচালনা করেন ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউল করিম ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে কোম্পানিতে নিয়োগকৃত নবীন কর্মকর্তাদের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় এবং তাদের অনুভূতি প্রকাশ করা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্রোটেক এনিমেল হেলথ-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মো. মাহবুবুর রহমান, গ্রোটেক এগ্রো’র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার এস.এম. আবু সায়েম প্রমুখ।
সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন কোম্পানীর এইচআর বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার নরোত্তম চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, ফিসটেক (বিডি) লিমিটেড (গ্রোটেক গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান) বাংলাদেশ মৎস্য সেক্টরে একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান এবং পাবদা ও গোলসা মাছের ফিড দেশে তারাই প্রথম বাজারজাত করে। তাদের রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি থেকে নিয়ে আসা তেলাপিয়া পোনার হ্যাচারি, মাছ ও চিংড়ির পুকুরের সমস্যা নিয়ে নিঁখুত গবেষণা ও পর্যালোচনার জন্য খুলনায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম আরটি-পিসিআর (রিয়াল-টাইমপলিমারেজ চেইনরিয়েকশান) ভিত্তিক মলিকু্লার ল্যাবরেটরী। এছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠান মৎস্য অধিদপ্তরের পরে বেসরকারি একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সবচেয়ে বেশি ফিশারিজ গ্রাজুয়েট কাজ করেন প্রতিষ্ঠানটিতে।