রবিবার , নভেম্বর ২৪ ২০২৪

মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাত চরম বৈষম্যের শিকার -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাতে চরম বৈষম্য উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকদের রক্তক্ষয়ী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে নতুনভাবে স্বাধীনতা আসলেও মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাতে যে বৈষম্য রয়েছে তা দূর করতে সরকার সর্বোচ্চভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

আজ  (৯ নভেম্বর) দুপুরে সিরডাপ মিলনায়তনে “Challenges and Forward” Rights of Small-Scale Fishing Communities: The Context of Bangladesh-বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেছেন, যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তারাই প্রকৃত মৎস্যজীবী। এক্ষেত্রে কোনভাবেই ব্যবসায়ীরা অন্তর্ভূক্ত হতে পারবেনা। মৎস্যজীবীদের মধ্যে মজুরি বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, নারী মৎস্যজীবীদের স্বীকৃতিকে বড় ধরনের সমর্থন জানাতে হবে-তাদের সাথে অন্য মৎস্যজীবীদের কোন পার্থক্য করা যাবেনা। সুযোগ-সুবিধা দিতে পারলে মৎস্যজীবীরা আর গরীব থাকবেনা।

উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা যদি মেরিন ফিশারিজকে সত্যিকার অর্থেই ব্যবহার করতে পারি বাংলাদেশ আর গরিব থাকবেনা। আমরা শুধু মৎস্য সম্পদের কথা বিবেচনা করি তাহলে দেখা যায়, এই বিশাল প্রজাতির মধ্যে অনেক প্রজাতি এখনও আমাদের আহরণের মধ্যে আসেনি। এমনকি, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সক্ষম উন্নত ভেসেল আমাদের নেই। আমরা জানিনা সত্যিকার আমাদের কত প্রজাতির মৎস্য সম্পদ আছে, তাদের মজুদ কেমন। সরকার নিজস্ব ভেসেল এনে এবিষয়ে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এজন্য দেশের  স্বার্থে স্বনামধন্য বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

ইলিশ মাছ আল্লাহর দান উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেছেন, নোনা পানি থেকে স্বাদু পানিতে আসা এবং ফেরত যাওয়ার মত মাইগ্রেটরি রুট ঠিক করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং ইলিশ আমাদের বড় সম্পদে পরিণত হবে। অতীতের সরকার ভারতের নতজানু থাকার ফলে বাংলাদেশে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সে দেশের জেলেরা আমাদের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে ইলিশ ধরে নিয়ে যেতো – এ সমস্যা লাঘবে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

উপদেষ্টা আরও বলেছেন, নদ-নদীর মত সমুদ্র দূষিতমুক্ত নয়। নদীর পানি সমুদ্রে যাচ্ছে সমুদ্রও দূষিত হচ্ছে। দেশে যেভাবে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হচ্ছে তা রোধ করা দরকার। আমরা যে মাছ খাচ্ছি-অনেক মাছের মধ্যে মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেছেন হাওর ও নদীর মাছ রক্ষায় অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেছেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনৎ কুমার ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো: জিয়া হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের পরিচালক অদ্বৈত চন্দ্র দাস, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্যাহ প্রমুখ।এক্সপার্ট গেস্ট হিসেবে বক্তৃতা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (অব) ড.আব্দুল ওয়াহাব এছাড়া সেমিনারে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার এসময় উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 460 times!

Check Also

যে জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়, ওই জেলার মানুষ গরিব হতে পারে না -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ভোলা সংবাদদাতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশের সম্পদ রক্ষায় সবাইকে একসাথে কাজ …