গাকৃবি সংবাদদাতা: মাছের বর্জ্য থেকে মূল্যবান পণ্য নিষ্কাশনের উপযুক্ত পদ্ধতি উন্নয়ন এবং এর সম্প্রসারণ বিষয়ে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি) ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর মধ্যে একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। কীভাবে মাছের বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা যায়, তার নিরিখেই এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।
গতকাল ১৬ মার্চ, রবিবার, দুপুর ২টায় গাকৃবির একাডেমিক কাউন্সিল সভাকক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। চুক্তিটি ইউএনডিপির ‘‘লোকাল গভর্নমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি ইন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক)” প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়েছে।
টেকসই, উদ্ভাবনী ও সম্প্রদায়ভিত্তিক উন্নয়নমূলক এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকৃবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ, ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সরদার আসাদুজ্জামান।
এছাড়া, ইউএনডিপি লজিক প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এ.কে.এম আজাদ রহমান, ইউএনডিপির অপারেশন ম্যানেজার মোঃ এনামুল হকসহ গাকৃবির বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালক, ফিশারিজ অনুষদের বিভাগীয় প্রধানগণ এবং রেজিস্ট্রার উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গাকৃবির পরিচিতি, উদ্ভাবন ও সাফল্য নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করেন গবেষণা পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মসিউল ইসলাম। এরপর প্রকল্পের প্রধান পিআই প্রফেসর ড. এস.এম রফিকুজ্জামান মাছের বর্জ্য বিষয়ে সম্ভাবনাময় তথ্যবহুল উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
প্রফেসর ড. রফিকুজ্জামান তাঁর উপস্থাপনায় দেখান, কীভাবে বছরে প্রায় ৬ থেকে ৮ লাখ টন মৎস্য বর্জ্য রিসাইকেল করে কোলাজেন, জিলাটিন, ফিশ সাইলেজ প্রভৃতি উৎপাদন করা সম্ভব। এটি একদিকে পরিবেশ দূষণ রোধ করবে, অন্যদিকে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইউএনডিপির অ্যাসিস্ট্যান্ট রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সরদার আসাদুজ্জামান বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ইউএনডিপির বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অনেক গবেষণা গাকৃবিতে চলমান রয়েছে। এ কারণে গাকৃবিকে টেকসই উন্নয়নের ‘ডিএনএ’ বলা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে ইউএনডিপি গাকৃবির সঙ্গে আরও প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে কাজ করবে।
গাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান ইউএনডিপিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে একটি যুগান্তকারী অধ্যায় রচিত হলো। দেশের মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করতে গাকৃবির ফিশারিজ অনুষদ অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তির ফলে গাকৃবির গবেষণা কার্যক্রম আরও সমৃদ্ধ হবে। পাশাপাশি, দেশের মৎস্য খাত উৎপাদন বৃদ্ধি ও বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি, গাকৃবির পরিচালক (আন্তর্জাতিক বিষয়ক) প্রফেসর ড. মোঃ আমজাদ হোসেন, সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।