বৃহস্পতিবার , নভেম্বর ২১ ২০২৪

২০২৪-২৫ সনের মধ্যে তেলফসলের উৎপাদন তিনগুণ বাড়ানো সম্ভব

কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ-হিল-কাফি (রাজশাহী) : প্রচলিত শস্যবিন্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে পতিত জমিতে তেলফসলের চাষ করে ২০২৪-২৫ সনের মধ্যে তেলফসলের উৎপাদন ২৪ লাখ টন বাড়ানো সম্ভব, যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় হয়। আমাদের চাহিদার ৯০ শতাংশ আমদানি করতে হচ্ছে। মাত্র ১০ শতাংশ দেশে আবাদ হচ্ছে। এছাড়াও বোরো মৌসুমের ব্রি-২৮, ব্রি-২৯সহ আমন ও আউশ চাষের প্রচলিত জাতগুলোর প্রতিস্থাপন করে উচ্চফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের চাষ বাড়িয়ে ২০২৪-২৫ সনের মধ্যে ধানের উৎপাদন প্রায় ৩২ লাখ টন বাড়ানো সম্ভব।

রাজশাহী কৃষি তথ্য সার্ভিস আয়োজিত “রাজশাহী অঞ্চলে ধানের ফলন বিঘ্ন না করে তেল ও ডাল সহ রবি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গণ মাধ্যমের ভূমিকা”-বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক কৃষিবিদ মো: সায়েদুর রহমান, পিএসও, ওএফআরডি, রাজশাহী। বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাজশাহীর কৃষি তথ্য সার্ভিসের সম্মেলন কক্ষে উক্ত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মো: শামসুল ওয়াদুদ, অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অঞ্চল, রাজশাহী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীজ প্রত্যয়ন এজন্সীর, আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ মো: শামীম আশরাফ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহীর উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মোজদার হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগজ্ঞের উপপরিচালক, কৃষিবিদ ড. পলাশ সরকার, নাটোর জেলার উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: আব্দুর ওয়াদুদ এবং নওগাঁ জেলার উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু হোসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ মো: আব্দুল্লাহ-হিল-কাফি।

প্রবন্ধ উপস্থাপক বলেন, বিজ্ঞানীরা যে নতুন প্রযুক্তি এনেছেন, এসব ব্যবহার করতে পারলে আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন  করতে পারব।  দুই যুগের বেশি সময় ধরে চাষ করা ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ জাতগুলোর রিপ্লেস করে ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০সহ বিভিন্ন উচ্চফলনশীল জাতের চাষ সম্প্রসারণ পরিকল্পনা অনুযায়ী করা গেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে হেক্টরপ্রতি উৎপাদনশীলতা ৪ মেট্রিক টন থেকে বাড়িয়ে ৪.৬০ টনে উন্নীত করা সম্ভব। ফলে এই সময়ে বোরোর মোট উৎপাদন ১৪.৩৮ লাখ মে টন বাড়ানো সম্ভব। একইভাবে জাতের পরিবর্তন করে আমনের হেক্টরপ্রতি উৎপাদনশীলতা ২.৯৫ মে টন থেকে বাড়িয়ে ৩.৪৪ টনে নেওয়া সম্ভব। যাতে করে উৎপাদন বাড়বে ১৪.৬৩ লাখ টন। আউশ মৌসুমেও একই কাজ করে ৩.৬২ লাখ টন ধানের উৎপাদন বাড়ানো যাবে।

সেমিনারে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ বেতার, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বিএডিসি, কোর্ট হর্টিকালচার সেন্টার, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, এআইপি পদক প্রাপ্ত কৃষক, বঙ্গবন্ধু পদক প্রাপ্ত কৃষক সহ ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধি সহ প্রায় ৪০ জন উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 2188 times!

Check Also

মাসকলাইয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে দেশে

মো. আমিনুল ইসলাম (রাজশাহী): বাংলাদেশে পতিত ও অব্যবহৃত জায়গাতেও পরিকল্পিতভাবে ফলমুল ও শাকসবজি চাষ করা …